রোজায় বেচতে রং-চিনিতে তৈরি হচ্ছে ‘খাঁটি’ আখের গুড়

রোজায় বেচতে রং-চিনিতে তৈরি হচ্ছে ‘খাঁটি’ আখের গুড়

সামনে পবিত্র মাহে রমজান। এ সময় আখের গুড়ের চাহিদা বাড়ে। আর তাই রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার উজানচর ইউনিয়নের মকবুলের দোকান সংলগ্ন চর ধোপাখালী নামক এলাকায় চিনি, আটা, ক্ষতিকর রং ও কেমিক্যালে তৈরি হচ্ছে ‘খাঁটি’ আখের গুড়। অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে তৈরি এ সব নকল গুড় উচ্চ দামে বিক্রি হচ্ছে খাঁটি গুড়ের লেবেল লাগিয়ে।

গুড় তৈরির সঙ্গে সরাসরি জড়িত স্থানীয়  গোলাম আলী শেখের ছেলে আফজাল শেখ। সোমবার সরেজমিনে ওই বাড়িতে গিয়ে ভেজাল গুড় তৈরির এ দৃশ্য দেখা গেছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আফজাল শেখ মাহে রমজানের সামনে রেখে গুড় তৈরি করছেন। এতে মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর সাদা চিনি, কাঠ বার্নিশে ব্যবহৃত রং ও কেমিক্যাল ব্যবহার করছেন। উৎপাদিত গুড়কে তিনি আসল গুড় হিসেবে অধিক মূল্যে বাজারে বিক্রি করছেন। এতে সাধারণ মানুষ প্রতারিত হওয়া ছাড়াও হুমকির মুখে পড়ছে জনস্বাস্থ্য।

স্থানীয়রা জানান, আফজাল শেখ গোয়ালন্দ বাজার, খানখানাপুর বাজার, বসন্তপুর বাজার,আরিফ বাজার,আনন্দ বাজারসহ এ অঞ্চলের প্রধান গুড় উৎপাদনকারী ও সরবরাহকারী। তিনি প্রতিনিয়ত শতশত কেজি ভেজাল গুড় উৎপাদন করে চলেছেন। ভেজাল গুড় তৈরির অপরাধে ইতোপূর্বে তিনি ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে ১ লাখ ২৫ হাজার টাকা জরিমানা দিয়েছেন। এরপর কিছুদিন বন্ধ রাখলেও রোজাকে সামনে রেখে আবারো শুরু করেছেন পুরোদমে।

এ বিষয়ে আফজাল শেখ  বলেন, রাজবাড়ীর পাংশা থেকে তিনি বেশি করে এক জ্বাল দেয়া আখের গুড় কিনে নিয়ে আসেন। গুড় তৈরির ক্ষেত্রে তিনি ৫০ কেজি পরিমাণ সেই গুড় ও ২৫ কেজি সাদা চিনি ব্যাবহার করেন। অতঃপর গুড়-চিনির মিশ্রণকে আগুনে জালিয়ে টিনের ছোট ছোট পাত্রে ঢেলে গুড় তৈরি করেন। এতে মিষ্টিতে ব্যবহৃত রং  ব্যবহার করেন তিনি। এছাড়া কোনো ক্ষতিকর কেমিক্যাল ব্যবহার করেন না।

এক-তৃতীয়াংশ সাদা চিনি মেশানোর ব্যাপারে তিনি দাবি করেন, এটা তিনি কর্তৃপক্ষকে জানিয়েই মেশান।এতে গুড় শক্ত ও সাদা হয়। গুড় তৈরির জন্য তার লাইসেন্স রয়েছে বলেও তিনি দাবি করেন। তবে সেটা দেখাতে পারেননি। নবায়নের জন্য অফিসার সূর্য কুমারের কাছে দিয়েছেন বলে জানান।

এ বিষয়ে রাজবাড়ী জেলা স্যানিটারি ইন্সপেক্টর সূর্য কুমার প্রামাণিক  বলেন, ভেজাল খাদ্য উৎপাদন ও খাদ্যের সঙ্গে কেমিক্যালের মিশ্রণ করা গুরুতর অপরাধ। ইতিপূর্বে  এ অপরাধে আফজালকে জরিমানা করা হয়। রোজার আগে আমরা আবারো ভেজাল বিরোধী অভিযান পরিচালনা করবো। অপরাধী কাউকে ছাড় দেয়া হবে না।

আপনি আরও পড়তে পারেন